mashrafe bin Mortaza । A Small Tribute To Boss Mashrafe Bin Mortaza । middle class
PART-1
Video---->
'
খুব কম মানুষই জন-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণীর মানুষের কাছে জনপ্রিয় হতে পারে। খুব সম্ভবত মাশরাফি বিন মুর্তজা এই ঘরানার একজন মানুষ। গোটা বাংলাদেশে তিনি এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষ বললেও হয়তো ভুল হবে না।
দলীয় যত খেলা আছে, তার মাঝে ক্রিকেটেই অধিনায়কের গুরুত্ব সম্ভবত সবচেয়ে বেশি। মাঠে থাকা অবস্থাতেই মুহূর্তের মাঝে অধিনায়ককে নানা রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বোলিং পরিবর্তন, ব্যাটসম্যানের দুর্বলতা বুঝে ফিল্ডিং পরিবর্তন, অফ ফর্মে থাকা কোনো খেলোয়াড়কে সমর্থন দেওয়া, সব খেলোয়াড়ের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখা আর সাথে সাথে নিজের ফর্মের দিকে লক্ষ্য রাখা- কাজগুলো নিঃসন্দেহে কঠিন। মাঠের বাইরেও অধিনায়কের অনেক কাজ থাকে। দেখা গেল, অধিনায়ক নিজেই ফর্মের সাথে লড়াই করছেন, এমন অবস্থাতেই অন্য খেলোয়াড়ের ভুলত্রুটি নিয়েও তাকে কথা বলতে হয়।
এই কাজগুলো ঠিকভাবে করতে গেলে সবার কাছে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ। অথচ বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের ড্রেসিং রুমে সিনিয়র-জুনিয়র সবার কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষটি হলেন ‘কৌশিক’ নামের আড়ালের এই মাশরাফিই।
শেষ পর্যন্ত তিনি হলেন গতির রাজা। তবে সেটা পানিতে নয়, ক্রিকেটের বাইশ গজে। এলাকায় বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট খেলতেন মাশরাফি, একসময় হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান হিসেবেই বেশি সমাদৃত ছিলেন। সময়ের সাথে সাথে সুযোগ পেলেন বিকেএসপির একটি ট্রেনিংয়ে। জীবনটা বদলে গেল বিকেএসপিতে থাকা অবস্থায় অ্যান্ডি রবার্টসের এক ক্যাম্পে। অ্যান্ডি রবার্টসের পরামর্শেই মাশরাফিকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেই টেস্ট অভিষেক হয়ে যায় মাশরাফির। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাউন্সারে এক ব্যাটসম্যানের হেলমেট ভেঙে ফেলেছিলেন মাশরাফি। খেলার পরেই নাকি ওরা ঠাট্টা করে মাশরাফির সাথে তাদের একজন ব্যাটসম্যান বদলে রেখে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই আমলে নিয়মিত ১৪৫ কি.মি. গতিতে বল করে যাওয়া একজন বোলারের জন্য এমন প্রস্তাব পাওয়া মোটেও অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেই ৪ উইকেট নেন মাশরাফি। সময়টা তখন ২০০১ সাল। মাশরাফি সেই বিরল ক্রিকেটারদের মাঝে একজন, যাদের কিনা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার আগেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। গত শতাব্দীর মাত্র ৩য় খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তিটি ঘটান তিনি।
সেই বছরেই ওয়ানডে ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় এবং অভিষেকেই ২৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে তিনি জানান দেন যে, এক সুপারস্টার এর আগমন ঘটছে ক্রিকেট দুনিয়ায়।
এরপরেই ২০০২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ মিস করেন তিনি ব্যাক ইনজুরির জন্য। তারপর আরেকটি ইনজুরির কারণে আট মাসের জন্য মাঠ থেকে বাইরে থাকেন। ইনজুরি থেকে ফিরে ২০০৩ বিশ্বকাপে মাশরাফি মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেন এবং দুটি উইকেট সংগ্রহ করেন।
২০০৩ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ড বাংলাদেশ সফরে আসে দুটো টেস্ট আর তিনটি ওয়ানডে খেলার জন্য। সেই সিরিজে মাশরাফি আবার ইনজুরিতে পড়েন এবং এবার তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হয় দীর্ঘ ১ বছরের জন্য! এই সিরিজে মাশরাফির সংগ্রহ ছিল ২১.২৫ গড়ে ৮ উইকেট।
২০০৪ সালের ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ডাক পান মাশরাফি। প্রথম টেস্টেই রাহুল দ্রাবিড়কে আউট করেন এবং তার বলে সৌরভ গাঙ্গুলী আর শচীন টেন্ডুলকারের দুটো ক্যাচ মিস হয়। টেস্ট সিরিজটি বাংলাদেশ হেরে গেলেও ওয়ানডে সিরিজে একটি চমক দেখান মাশরাফি। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ১৫ রানে হারায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ম্যান অব দি ম্যাচ হন মাশরাফি। এটি ছিল বাংলাদেশের শততম ম্যাচ। দুই উইকেট, দুই ক্যাচ আর অপরাজিত ৩১ রানের একটি ইনিংস- পুরোদস্তুর অলরাউন্ডিং এক পারফর্মেন্স ছিল তার।
এভাবে ইনজুরি কাটিয়ে বারবার ফিরে এসে ধীরে ধীরে মাশরাফি হয়ে উঠেন দলের জন্য আরো অপরিহার্য।
তবে আসল চমকটা দেখা যায় বিশ্বকাপের মূল পর্বে। একই গ্রুপে ভারত আর শ্রীলঙ্কা থাকায় অনেকেই ধারণা করেছিল, গ্রুপ পর্ব থেকেই বাংলাদেশের বিদায় হবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে হট ফেভারিট ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেই ম্যাচের ম্যান অব দি ম্যাচও হন মাশরাফি।
সফল একটি বিশ্বকাপ কাটানোর পর মাশরাফি ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলের পক্ষে একই সাথে সবচেয়ে বেশি রান এবং সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব গড়েন।
সেই বছরেই আফ্রো এশিয়া কাপ সিরিজে পাকিস্তানি বোলার শোয়েব আখতারের পরিবর্তে এশিয়া স্কোয়াডে সুযোগ পান মাশরাফি। ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক জয়েও বিপক্ষ দলের প্রথম তিনটি উইকেট সহ মাত্র ৪৪ রানে ৪টি উইকেট শিকার করেন তিনি।
২০০৯ সালে মাশরাফি আইপিএল এ কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সুযোগ পান। তিনি মাত্র একটি ম্যাচ খেলেন সেখানে। সেই ম্যাচের স্মৃতিটা অবশ্য তার জন্য বেশ দুঃখজনক ছিল। শেষ ওভারে তিনি ২১ রান দেওয়ায় ম্যাচটি হেরে যায় কলকাতা।
চার বছর পর সেই দুঃখটা কিছুটা লাঘব হয়, যখন তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ পায়।
উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ আছে যে, তারা সহজে অবসর নিতে চান না। একারণে বাধ্য হয়ে তাদেরকে বাদ দিতে হয়। মাশরাফি বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড়, যিনি কিনা অধিনায়ক থাকা অবস্থায় টি-২০ দল থেকে অবসর নিয়েছেন
‘জনপ্রিয়তা’ সাধারণ মানুষের কাছে খুবই আকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। খুব কম মানুষই আছেন, যারা কিনা জনপ্রিয় হতে চান না। তবে বেশিরভাগ জনপ্রিয় মানুষদের ক্ষেত্রেই একটি সাধারণ বিষয় থাকে। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে সব জনপ্রিয় মানুষই কোনো না কোনো কারণে অন্য আরেকদল মানুষের কাছে খুব ঘৃণিত থাকে। সমসাময়িক দুই গ্রেট খেলোয়াড়ের দিকে তাকালে বিষয়টা কিছুটা বুঝতে পারবেন। ‘মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো’- গোটা পৃথিবী জুড়েই এই দুজনের ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকলেও, তাদের হেটারেরও কমতি নেই। আমাদের দেশের সাকিব আল হাসান কিংবা তামিম ইকবালও এর উদাহরণ। দেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা থাকলেও কিছু মানুষ সবসময়েই এদের সমালোচনা করে যেতে থাকে।
খুব কম মানুষই জন-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণীর মানুষের কাছে জনপ্রিয় হতে পারে। খুব সম্ভবত মাশরাফি বিন মুর্তজা এই ঘরানার একজন মানুষ। গোটা বাংলাদেশে তিনি এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষ বললেও হয়তো ভুল হবে না।
দলীয় যত খেলা আছে, তার মাঝে ক্রিকেটেই অধিনায়কের গুরুত্ব সম্ভবত সবচেয়ে বেশি। মাঠে থাকা অবস্থাতেই মুহূর্তের মাঝে অধিনায়ককে নানা রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বোলিং পরিবর্তন, ব্যাটসম্যানের দুর্বলতা বুঝে ফিল্ডিং পরিবর্তন, অফ ফর্মে থাকা কোনো খেলোয়াড়কে সমর্থন দেওয়া, সব খেলোয়াড়ের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখা আর সাথে সাথে নিজের ফর্মের দিকে লক্ষ্য রাখা- কাজগুলো নিঃসন্দেহে কঠিন। মাঠের বাইরেও অধিনায়কের অনেক কাজ থাকে। দেখা গেল, অধিনায়ক নিজেই ফর্মের সাথে লড়াই করছেন, এমন অবস্থাতেই অন্য খেলোয়াড়ের ভুলত্রুটি নিয়েও তাকে কথা বলতে হয়।
এই কাজগুলো ঠিকভাবে করতে গেলে সবার কাছে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ। অথচ বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের ড্রেসিং রুমে সিনিয়র-জুনিয়র সবার কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষটি হলেন ‘কৌশিক’ নামের আড়ালের এই মাশরাফিই।
জন্ম তার নড়াইলে। এই অঞ্চলের খুব বিখ্যাত একজন মানুষ হচ্ছেন কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। সেই নড়াইলেরই পথে ঘাটে ছড়িয়ে আছে এক দস্যি ছেলের অজস্র দুরন্তপনার সাক্ষ্য। খুব ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি তার আগ্রহ ছিল। কিন্তু সেটা প্রথাগত ক্রিকেট কিংবা ফুটবল নয়, সাঁতারে। চিত্রা নদীর সাথে তার সখ্যতা যেন নড়াইলের রূপকথার মতো। নদীর গতির বিপক্ষে নিজের গতি দিয়ে লড়াই করাই ছিল তার নেশা।
শেষ পর্যন্ত তিনি হলেন গতির রাজা। তবে সেটা পানিতে নয়, ক্রিকেটের বাইশ গজে। এলাকায় বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট খেলতেন মাশরাফি, একসময় হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান হিসেবেই বেশি সমাদৃত ছিলেন। সময়ের সাথে সাথে সুযোগ পেলেন বিকেএসপির একটি ট্রেনিংয়ে। জীবনটা বদলে গেল বিকেএসপিতে থাকা অবস্থায় অ্যান্ডি রবার্টসের এক ক্যাম্পে। অ্যান্ডি রবার্টসের পরামর্শেই মাশরাফিকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেই টেস্ট অভিষেক হয়ে যায় মাশরাফির। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাউন্সারে এক ব্যাটসম্যানের হেলমেট ভেঙে ফেলেছিলেন মাশরাফি। খেলার পরেই নাকি ওরা ঠাট্টা করে মাশরাফির সাথে তাদের একজন ব্যাটসম্যান বদলে রেখে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই আমলে নিয়মিত ১৪৫ কি.মি. গতিতে বল করে যাওয়া একজন বোলারের জন্য এমন প্রস্তাব পাওয়া মোটেও অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেই ৪ উইকেট নেন মাশরাফি। সময়টা তখন ২০০১ সাল। মাশরাফি সেই বিরল ক্রিকেটারদের মাঝে একজন, যাদের কিনা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার আগেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। গত শতাব্দীর মাত্র ৩য় খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তিটি ঘটান তিনি।
সেই বছরেই ওয়ানডে ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় এবং অভিষেকেই ২৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে তিনি জানান দেন যে, এক সুপারস্টার এর আগমন ঘটছে ক্রিকেট দুনিয়ায়।
প্রথাগতভাবেই ভারত কিংবা বাংলাদেশে ফাস্ট বোলারের সংখ্যা কম। এর মধ্যে মাশরাফির আগমন মরুভূমির মাঝে এক চিলতে জলাধারের মতোই ছিল। ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল তার দুর্দান্ত। দুটো টেস্ট সিরিজের মাত্র ৪ টেস্টে মাশরাফির সংগ্রহ ছিল ৩১.১৬ গড়ে ১২টি উইকেট।
এরপরেই ২০০২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ মিস করেন তিনি ব্যাক ইনজুরির জন্য। তারপর আরেকটি ইনজুরির কারণে আট মাসের জন্য মাঠ থেকে বাইরে থাকেন। ইনজুরি থেকে ফিরে ২০০৩ বিশ্বকাপে মাশরাফি মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেন এবং দুটি উইকেট সংগ্রহ করেন।
২০০৩ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ড বাংলাদেশ সফরে আসে দুটো টেস্ট আর তিনটি ওয়ানডে খেলার জন্য। সেই সিরিজে মাশরাফি আবার ইনজুরিতে পড়েন এবং এবার তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হয় দীর্ঘ ১ বছরের জন্য! এই সিরিজে মাশরাফির সংগ্রহ ছিল ২১.২৫ গড়ে ৮ উইকেট।
২০০৪ সালের ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ডাক পান মাশরাফি। প্রথম টেস্টেই রাহুল দ্রাবিড়কে আউট করেন এবং তার বলে সৌরভ গাঙ্গুলী আর শচীন টেন্ডুলকারের দুটো ক্যাচ মিস হয়। টেস্ট সিরিজটি বাংলাদেশ হেরে গেলেও ওয়ানডে সিরিজে একটি চমক দেখান মাশরাফি। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ১৫ রানে হারায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ম্যান অব দি ম্যাচ হন মাশরাফি। এটি ছিল বাংলাদেশের শততম ম্যাচ। দুই উইকেট, দুই ক্যাচ আর অপরাজিত ৩১ রানের একটি ইনিংস- পুরোদস্তুর অলরাউন্ডিং এক পারফর্মেন্স ছিল তার।
এভাবে ইনজুরি কাটিয়ে বারবার ফিরে এসে ধীরে ধীরে মাশরাফি হয়ে উঠেন দলের জন্য আরো অপরিহার্য।
২০০৭ বিশ্বকাপে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ডকে হারানোর ক্ষেত্রে আবারও মাশরাফি তার অলরাউন্ডিং ভূমিকা পালন করেন। নিউজিল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারানো সেই ম্যাচে ৪টি উইকেট নেওয়ার সাথে সাথে ১৬ বলে ৩০ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেন তিনি।
তবে আসল চমকটা দেখা যায় বিশ্বকাপের মূল পর্বে। একই গ্রুপে ভারত আর শ্রীলঙ্কা থাকায় অনেকেই ধারণা করেছিল, গ্রুপ পর্ব থেকেই বাংলাদেশের বিদায় হবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে হট ফেভারিট ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেই ম্যাচের ম্যান অব দি ম্যাচও হন মাশরাফি।
সফল একটি বিশ্বকাপ কাটানোর পর মাশরাফি ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলের পক্ষে একই সাথে সবচেয়ে বেশি রান এবং সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব গড়েন।
সেই বছরেই আফ্রো এশিয়া কাপ সিরিজে পাকিস্তানি বোলার শোয়েব আখতারের পরিবর্তে এশিয়া স্কোয়াডে সুযোগ পান মাশরাফি। ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক জয়েও বিপক্ষ দলের প্রথম তিনটি উইকেট সহ মাত্র ৪৪ রানে ৪টি উইকেট শিকার করেন তিনি।
২০০৯ সালে মাশরাফি আইপিএল এ কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সুযোগ পান। তিনি মাত্র একটি ম্যাচ খেলেন সেখানে। সেই ম্যাচের স্মৃতিটা অবশ্য তার জন্য বেশ দুঃখজনক ছিল। শেষ ওভারে তিনি ২১ রান দেওয়ায় ম্যাচটি হেরে যায় কলকাতা।
২০০৯ সালে মাশরাফি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে অধিনায়ক নিযুক্ত হন। কিন্তু প্রথম টেস্টেই ইনজুরিতে পড়ে দল থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। মাঝে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের পর মাশরাফি জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্টটা পান তখন, যখন তিনি আবিস্কার করেন, ঘরের মাঠে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার নামটা নেই।
চার বছর পর সেই দুঃখটা কিছুটা লাঘব হয়, যখন তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ পায়।
উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ আছে যে, তারা সহজে অবসর নিতে চান না। একারণে বাধ্য হয়ে তাদেরকে বাদ দিতে হয়। মাশরাফি বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড়, যিনি কিনা অধিনায়ক থাকা অবস্থায় টি-২০ দল থেকে অবসর নিয়েছেন
No comments:
Post a Comment